প্রদীপ শীল, রাউজান
রাউজানের বাগোয়ানে রাতের আঁধারে প্রবাসীর ঘরে সশস্ত্র হামলা, ভাংচুর, চাঁদা দাবী ও হত্যার হুমকি অভিযোগ রাউজান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ২৪ মার্চ (সোমবার) বিকাল ৪ টার দিকে ভুক্তভোগী আবুধাবী প্রবাসী নেজাম উদ্দিন থানায় উপস্থিত হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জনকে আসামী করে অভিযোগটি দায়ের করেন। ভুক্তভোগী নেজাম উদ্দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী এবং
উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি ও বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানান তিনি। গত ৭ আগস্ট তিনি দেশে ফিরেন।মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য,বাচু মিয়া প্রকাশ বেচু (৫৫), আব্দুর শুক্কুর (৪২), মীর আহম্মদ(৪৫), নুর নবী (৪০), মো. হাসেম (৩২), মো. পারভেজ(৩২), মো. তারেক (৩৫), মো. সাজ্জাদ হোসেন নয়ন (২৮), মো. জাগির হোসেন (৪৫), মো. ইয়াকুব(৩২), মো. নিজাম (৫০), মো. জাগির হোসেন(৪৬), মো. সাইমন(২৫), মো. ইব্রাহিম জয়(২৬),মো. রিমন (২৪), মো. মুন্না তালুকদার (২৫), মো. বাবু (২৪)ও মো. হৃদয়(২১)।
ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা যায়,শনিবার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিপাড়া গ্রামের হালিমা মঞ্জিলে ৩০-৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল সীমানা প্রাচীর টপকে গুলিবর্ষণ করে, ইটের টুকরা দিয়ে ঘরের দরজা, কাঁচ ভাংচুর করে, গালিগালাজ করে চাঁদা দাবী করেন। এই সময় ভুক্তভোগী নেজাম উদ্দিন শহরের বাসাতে অবস্থান করলেও বাড়িতে ছিলেন তিনদিন পূর্বে প্রবাস থেকে আসা ছোট ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাইপো-ভাইঝি ও তার বৃদ্ধ মা। তার ভয়ে- আতঙ্কে হতভম্ব ৯৯৯ -এ কল দিয়ে সংযোগ না পেয়ে নেজামকে ফোনে জানালে তিনি রাউজান থানায় ফোন ঘটনা জানালে চুয়েট ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মামুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এরপূর্বে সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একদল সশস্ত্র সন্ত্রাস দেওয়াল টপকিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে ঢিল ছুড়ে, বাঁশ দিয়ে দরজা জানালার কাঁচ ভাংচুর করছে। নেজামের নাম ধরে গালিগালাজ করছে।এই বিষয়ে নেজাম উদ্দিন বলেন, আমি শনিবার বাড়িতে এসে কিছু ঈদ উপহার বিতরণ করে ইফতার করে শহরে চলে যায়। রাতে আমার ভাই ফোন দেয় ঘরে সন্ত্রাসীরা হামলা করছে ভাংচুর চালাচ্ছে। আমি সাথে রাউজান থানায় ফোন দিলে চুয়েট ফাঁড়ির ইনচার্জ এস. আই মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আমি (সোমবার) থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের করেছি। তিনি আরো বলেন, আমি গত ১৬ সালে বিএনপি হতে ইউপি নির্বাচনে ঝুঁকি নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলাম।এখন অনেকেই মনে করছে আমি পুনরায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হব। এর কারণে শত্রুতার বশবর্তী হয়ে হামলা করতে পারে। তাছাড়া লাম্বুর হাট হোসাইনিয়া মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী হামলা করে।আমি আমার নেতা গিয়াস ভাইয়ের নির্দেশে সেখানে গিয়ে মাদ্রাসা কমিটির সাথে কথা বলি। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে হুমকি থাকা স্বত্বেও মানববন্ধন করতে সহায়তা করি। এই কারণে সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে এই ঘটনা ঘটাতে পারে। কারা ঘটিয়ে তা সিসিটিভি ফুটেজ দেখা গেছে।ঘটনার সময় বাড়িতে থাকা তার প্রবাসী ভাই সাহেদ বলেন, আমি বাড়ি এসেছি কয়েকদিন হচ্ছে। শনিবার রাতে ২০-৩০জনের সন্ত্রাসীর দল ঘরে হামলা করে। আমরা ভিতরে লাইট বন্ধ করে দিয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠে যায়। বাড়ির ছেলে মেয়ের ভয়ে কান্না করতে থাকে। তারা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি ৯৯৯-এ ফোন দিলে সংযোগ না পেলে বড় ভাইকে ফোন দিন। পুলিশ আসার আগে তারা পালিয়ে যায়।রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগটি পরবর্তীতে মামলার রূপান্তর করা হবে।
Leave a Reply